প্রচ্ছদ > জাতীয় >

উপাচার্য নিয়োগে মৃদু বিএনপিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে : ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ

article-img

পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, ‘গত ৫ আগস্টের পর দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে মৃদু বিএনপি বা নিষ্ক্রিয়ভাবে বিএনপি করেন, এমন শিক্ষকদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।’

শনিবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রেক্ষাপটে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট’ শীর্ষক আলোচনাসভায় এ কথাগুলো বলেন তিনি। 

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর শিক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তাঁর দায়িত্ব পালনকালে দেশের বেশির ভাগ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য নিয়োগ হয়।

 

 
আলোচনাসভায় ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তো একটা ট্যাগ (রাজনৈতিক পরিচয়) থাকেই; হয় সাদা দল, না হয় নীল বা অন্য কিছু। তবে আমি উপাচার্য নিয়োগের জন্য যাদের কাছ থেকে তালিকা সংগ্রহ করেছিলাম, তাদের কিছু মানদণ্ডের কথা বলে দিয়েছিলাম।’

 

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ তো হওয়া যাবে না, কাজেই মৃদু বিএনপি হওয়া যাবে, অথবা নিষ্ক্রিয় বিএনপি হওয়া যাবে।’

বিষয়টি নিয়ে বিএনপির মধ্যেও হাসাহাসি হয় বলে জানান উপদেষ্টা।

 

তিনি বলেন, ‘বিএনপির লোকজন বলে যে উনি (উপদেষ্টা) তো আমাদের (বিএনপি) লোক নেন না। এত দিন ধরে বঞ্চিত লোকজন রয়েছে, তাদের কাউকেই নেন না; উনি (উপদেষ্টা) শুধু নিষ্ক্রিয় বা মৃদু বিএনপি নেন। এই কথাটা কিন্তু খুব প্রচলিত আছে।’

 

উপাচার্য নিয়োগ দিতে গিয়ে যোগ্য লোক খুঁজে পেতে বেগ পেতে হয়েছিল জানিয়ে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘নির্দলীয় সরকারের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা, সবচেয়ে অসুবিধা হচ্ছে এতগুলো পদ খালি রয়েছে, কিন্তু এই পদে আমি কাকে নিয়োগ দেব, তা খুঁজে পাই না।

 

কারণ, রাজনৈতিক দল না হওয়ায় আমরা লোকজন বেশি চিনি না।’

 

তবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিজের বন্ধু ও পরিচিতদের মাধ্যমে উপাচার্য নিয়োগের জন্য যোগ্য প্রার্থী খুঁজেছিলেন বলে জানান ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকেও তাঁর কাছে উপাচার্য নিয়োগের জন্য তালিকা দেওয়া হয়েছিল বলে জানান তিনি।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘আমার একজন বন্ধু এবং শিক্ষাজীবনে আমার রুমমেট ছিল—মির্জা ফখরুল (বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর)। তাকে বলেছিলাম, তুমি দলীয় বিবেচনা বাদ দিয়ে বন্ধু হিসেবে তোমার পরিচিতদের কাছ থেকে শিক্ষা খাত ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে নিয়োগের জন্য কিছু সৎ লোকের তালিকা দাও।

 

তোমরা আগে সরকার চালিয়েছ, তোমাদের দল আছে, দলীয় এত লোক আছে। আমাকে কিছু সৎ মানুষের তালিকা দিতে পারো।’

 

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ আরো বলেন, ‘আমার বলার পরে তার (ফখরুল) উত্তর ছিল, আমাদের (বিএনপি) কেউ গত ১৫ বছরে তো উঠতেই পারেনি। কাজেই সে দুর্নীতিবাজ হবে, কী দক্ষ হবে, আমি বুঝব কী করে। মির্জা ফখরুল আমার বন্ধু হিসেবে বন্ধুর মতোই বলেছে। যে সমস্যাটা বুঝতে পেরেছে। কিন্তু তার দলের (বিএনপি) থেকে আমাকে তালিকা দেওয়া হয়েছে।’

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘যখন আমরা বিদায় নেব, তখন আমরা কী কী করে যাচ্ছি আমি একটা লিস্ট করে যেতে চাই। যাতে করে সবাই জানুক। আমাদের প্রচারণার জন্য না পরবর্তী সরকারের জন্য যেহেতু উদাহরণ হিসেবে থাকে এবং তার থেকে বিচ্যুতি হলে অন্তত সবাই চোখে পড়ে।’